নির্যাতিতার মা ভাল আছেন
আরজি করের নির্যাতিতা ও নিহত মেডিক্যাল ছাত্রীর মায়ের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। ভাল আছেন তিনি, প্রয়োজনীয় সমস্ত চিকিৎসাই হয়েছে এবং তাঁর তরফ থেকে কোনও অভিযোগ নেই। মণিপাল মেডিকা হাসপাতালের তরফে এমনই এক বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে রবিবার।
ওই বিবৃতি বলছে, জরুরি বিভাগে রাতভর পর্যবেক্ষণে ছিলেন তিনি। তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল ছিল। তাঁর সব ধরনের গুরুত্বপূর্ণ শারীরবৃত্তীয় সূচক স্বাভাবিক সীমার মধ্যে রয়েছে। তিনি সারা রাত ভাল ঘুমিয়েছেন এবং মাথাব্যথা বা বমিভাবের অভিযোগ করেননি। স্বাভাবিকভাবেই খাবার খেয়েছেন এবং চিকিৎসক-সুপারভিশনে জরুরি বিভাগের ভিতরে হেঁটেওছেন।
রবিবার সকালে ইআর কনসালট্যান্ট এবং নিউরো টিম রোগীকে পরীক্ষা করে দেখেন। নতুন কোনও শারীরিক সমস্যা না থাকায়, তাঁরা আগের মতোই বাড়িতে থেকে সংরক্ষণমূলক চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। হাসপাতাল আরও জানিয়েছে, প্রত্যেক রোগীর ক্ষেত্রেই যেমন হয়, তেমনই নির্যাতিতার মায়ের চিকিৎসাতেও সমস্ত চিকিৎসা প্রোটোকল কঠোরভাবে মেনে চলা হয়েছে, যা মণিপাল হাসপাতালের দেশজুড়ে প্রচলিত রোগীসেবা ও নিরাপত্তার মানদণ্ডকে প্রতিফলিত করে।
শনিবার নবান্ন অভিযানে যোগ দিতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন অভয়ার মা। তাঁর দাবি, অভিযানের সময় পুলিশ মাথায় লাঠি মেরেছে, শাঁখা ভেঙে দিয়েছে, পিঠে আঘাত করেছে এবং মাটিতে ফেলে দিয়েছে। একইসঙ্গে স্বামীকেও মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। তবে কলকাতা পুলিশ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
শুধু তাই নয়, এই গন্ডগোলের পর থেকেই নির্যাতিতার মায়ের চিকিৎসা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে চাপানউতোর শুরু হয়। বিরোধীদের একাংশের তরফে অভিযোগ ওঠে, সরকারি চাপ রয়েছে চিকিৎসার উপর।
প্রসঙ্গত, শনিবারই তাঁকে শহরের ওই বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রাথমিক সিটি স্ক্যান রিপোর্ট স্বাভাবিক এলেও কপালে হেমাটোমা ধরা পড়ে। হাসপাতালে গিয়ে বিজেপি নেতা ও কলকাতা পুরসভার ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সজল ঘোষ বলেন, “রোগী এখন অনেকটাই স্থিতিশীল। কিন্তু আঘাতটা সবাই দেখেছেন। বয়সও সবার জানা। এখানে সরকারি চাপ রয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও সেটা স্বীকার করেছে, যদিও প্রকাশ্যে বলছে না। এখানে যে ধরনের চিকিৎসা হওয়া উচিত, সেটা দেওয়া হচ্ছে না।”
তিনি আরও জানান, রবিবার সকালে তাঁকে কল্যাণী এইমসে নিয়ে যাওয়া হবে। এর আগেও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেছিলেন, আরজি করের কেস 'ক্লোজড' করে দিতে নবান্ন অভিযানেই অভয়ার মা-বাবাকে শেষ করে দিতে চেয়েছিল পুলিশ। এবার চিকিৎসায় ‘সরকারি চাপ’-এর অভিযোগ ঘিরে নতুন করে বিতর্ক উস্কে যায়।