লালকেল্লা থেকে জাতির উদ্দেশে বক্তৃতা দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী
গত ১১ বছর ধরে এই ধারা চলছে। ১৫ অগস্ট (15th August) , স্বাধীনতা দিবসে (Independence Day) লালকেল্লা থেকে জাতির উদ্দেশে বক্তৃতা দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। আর আমরা অনেকেই বিস্ময় বালকের মতো চেয়ে থাকি! ভাবি— আহা, বাহা, স্বাধীনোত্তর ভারতবর্ষে এমন কথা কোন প্রধানমন্ত্রীই বা বলতে পেরেছেন!
ফি বছর লালকেল্লায় মোদীর সাফাও (পড়ুন পাগড়ি) বদলে বদলে যায়। আমরা খবর লিখি তা নিয়েও। অথচ সারা বছর কঠোর কায়িক পরিশ্রমের মধ্যে, এই ১৫ অগস্ট দিঘা-পুরী-দার্জিলিংয়ের অবসরে খুব কম মানুষই হয়তো ভেবে দেখি, কোন কথা নতুন, কোন কথা পুরো ফাঁপা, আর কোন কথাই বা কেবল রাজনীতি আর হাততালির জন্য!
শুক্রবার লালকেল্লা থেকে স্বাধীনতা দিবসের বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী এবারেও একটি ‘নতুন ঘোষণা’ করেছেন। এমন একটি কথা, যা শুনে শুভেন্দু অধিকারী বা শমীক ভট্টাচার্যরা অতিশয় আহ্লাদিতও হয়ে পড়তে পারেন। তা হল, এবার একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ‘ডেমোগ্রাফি মিশন’ গঠন করবে মোদীর সরকার। যে মিশনের লক্ষ্য হবে, দেশজুড়ে অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া।
লালকেল্লায় গেরুয়া পাগড়ি পরে মোদী এদিন বলেন, “পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে দেশের জনসংখ্যার বিন্যাস বদলানোর চেষ্টা চলছে, নতুন সঙ্কটের বীজ বপন করা হচ্ছে। অনুপ্রবেশকারীরা দেশের যুবকদের রোজগার কেড়ে নিচ্ছে, আমাদের মা-বোন-মেয়েদের নিশানা করছে, আদিবাসীদের জমি দখল করছে। এটা কোনওভাবেই সহ্য করা হবে না।”
আমি দিল্লিতে সাংবাদিকতা শুরু করেছিলাম ২০০৩ সালে। তখন অটল বিহারী বাজপেয়ী প্রধানমন্ত্রী। দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও উপপ্রধানমন্ত্রী হলেন লালকৃষ্ণ আডবাণী। সে সময়ে এখনকার মতো শ’য়ে শ’য়ে মিডিয়া ছিল না। সংসদের ভিতরে বা বাইরে এবং বিজেপির পার্টি অফিসে লালকৃষ্ণ আডবাণীর সঙ্গে সরাসরি কথা বলার সুযোগ পাওয়া যেত। প্রশ্নের উত্তর দিতেও দ্বিধা করতেন না তিনি। অন্তত একশো বার আডবাণীর বক্তৃতায় বা তাঁর সঙ্গে আলাপচারিতায় অনুপ্রবেশ নিয়ে অসন্তোষের কথা শুনেছি। এমনকি মনমোহন জমানাতেও আডবাণী বারবার সরব হয়েছেন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ নিয়ে। তিনি সমালোচনা করতেন এ ব্যাপারে মনমোহন-সনিয়ার নরমপন্থা নিয়েও। বিজেপির ওয়েবসাইটে গেলে এখনও হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে তাঁর সেই সব বিবৃতি।