লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের মতই বড় ঘোষণা মমতার
সময়ে নির্বাচন হলে বাংলায় বিধানসভা ভোটের আর ৮ মাস বাকি। অনেকেই বলতে শুরু করেছেন এটা ভোট বছর। ঠিক এমনই পরিস্থিতিতে সোমবার বিকেলে বড় ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। যে ঘোষণা লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের মতই আড়েবহরে বেশ বড়। তা হল বাংলার যাঁরা পরিযায়ী শ্রমিক হিসাবে ভিন রাজ্যে কাজ করছেন, তাঁরা ঘরে ফিরলে তাঁদের সাময়িক ভাতা দেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার। যে প্রকল্পের নাম হল ‘শ্রমশ্রী’ (Shramashree)।
সোমবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠক ছিল। পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য নতুন প্রকল্পের ব্যাপারে ওই বৈঠকেই প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। তার পর নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ভিন রাজ্যে বাংলার শ্রমিকদের উপর লাগাতার অত্যাচার চলছে। অনেকেই কাজ হারাচ্ছেন, পাচ্ছেন না ন্যায্য মজুরি বা ন্যূনতম সম্মান। তাঁদের স্বার্থেই ‘শ্রমশ্রী’ চালু করছে রাজ্য সরকার।
কী থাকছে ‘শ্রমশ্রী’তে? (What is Shramashree project?)
এ হল অনেকটা উৎসাহ ভাতা। বাংলার শ্রমিকদের রাজ্যে ফিরে আসার জন্য উৎসাহ দিতেই এই প্রকল্প। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গে ফিরে আসার পর প্রথম ১ বছর প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকা করে পুনর্বাসন ভাতা পাবেন শ্রমিকরা। তাঁরা স্বাস্থ্যসাথী কার্ড পাবেন। কারও পাকা বাড়ি না থাকলে আবাস যোজনায় অনুদান পাবেন। ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনার জন্য সরকারি সহায়তা দেওয়া হবে। তা ছাড়া অন্যান্য সামাজিক নিরাপত্তা প্রকল্পেও অন্তর্ভুক্ত করা হবে তাঁদের।
শ্রমশ্রীর সুবিধা পাবেন কারা? (Who can apply for Shramashree?)
প্রাথমিকভাবে বাংলার ২২ লক্ষ ৪০ হাজার শ্রমিক যাঁরা ইতিমধ্যেই সরকারি পোর্টালে নাম নথিভুক্ত করেছেন, তাঁরা এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই প্রকল্পের রূপায়ণ ও কার্যকারিতার বিষয়টি দেখবে শ্রম দফতর এবং পুরো বিষয়টির ওপর সরাসরি নজরদারি করবেন রাজ্যের মুখ্যসচিব।
‘শ্রমশ্রী’ প্রকল্পকে পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ‘ঘরে ফেরার সেতু’ বলেই ব্যাখ্যা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, "এই শ্রমিকরাই আমাদের গর্ব, তাঁদের সম্মান রক্ষায় রাজ্য সরকার সবরকম ব্যবস্থা নেবে।"
তবে বিরোধীরা এই প্রকল্পের ব্যাপারে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন। বিজেপির মুখপাত্র সজল ঘোষ বলেন, “এও একটা স্ক্যাম হতে চলেছে। প্রথম কথা হল, ২২ লক্ষ লোক বাংলায় ফিরে করবে কী, কাজের সুযোগই তো তৈরি করতে পারেনি বর্তমান সরকার। দেখা যাবে, এই টাকা ভূতে লুটে খাচ্ছে। ঠিক যেমন একশ দিনের কাজে ভুয়ো জব কার্ডে টাকা লুঠ হয়েছে”।
প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, এই ঘোষণায় কোনও স্থায়ী সমাধানের দিশা নেই। যা রয়েছে তা হল খয়রাতি করে ভোট কেনার। যাতে তথাকথিত ওই ২২ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক টাকার জন্য অন্তত ভোটের দিন এসে ভোটটা দিয়ে যান।