দলের বিজয়া সম্মিলনীতে কাদের কথা তুললেন অনুব্রত
বিজয়া সম্মিলনী (Bijaya Sammilani)। সেখানে দলীয় সৌহার্দ্য আর সংহতির বার্তা দেওয়ার কথা। কিন্তু রাজ্যজুড়ে তৃণমূলের (Trinamool) এই অনুষ্ঠানে বারবার প্রকাশ্যে আসছে অন্তর্দলীয় দ্বন্দ্ব। বীরভূম থেকে উত্তর ২৪ পরগনা, পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে মুর্শিদাবাদ— সব জায়গাতেই যেন মিলছে একই ছবি।
শনিবার বীরভূমের মুরারই ১ ব্লকে দলের বিজয়া সম্মিলনীতে হাজির ছিলেন তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal), সাংসদ শতাব্দী রায় ও জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ (Kajal Seikh)। কিন্তু সৌহার্দ্যের বদলে সেখানেই শোনা গেল স্লোগান আর পাল্টা স্লোগানের শব্দ। কাজল শেখ মঞ্চে উঠতেই তাঁর অনুগামীদের সামনে অনুব্রত মণ্ডলের নামে স্লোগান ওঠে। মুহূর্তেই কাজল অনুগামীদের পাল্টা স্লোগান। প্রকাশ্যে আসে দুই শিবিরের অন্দরের টানাপড়েন।
বীরভূম জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্যেই ফুটে উঠল ক্ষোভ। তিনি বলেন, “আমাদের শত্রু দলের মধ্যেই আছে।” আর সেই সুরেই অনুব্রত মণ্ডল মন্তব্য করেন, “তৃণমূলের শত্রু বিজেপি নয়, কংগ্রেসও নয়। তৃণমূলের শত্রু তৃণমূলই।”
এদিকে, একই দিনে উত্তর ২৪ পরগনার হাড়োয়াতেও বিজয়া সম্মিলনী ঘিরে নতুন বিতর্ক। অভিযোগ, স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক রবিউল ইসলাম দলের অন্য নেতৃত্বকে না জানিয়েই নিজের ঘনিষ্ঠদের নিয়ে অনুষ্ঠান করেছেন। ব্লক সভাপতি অরূপ বিশ্বাসের অভিযোগ, “আমি ব্লক সভাপতি, অথচ জানি না আজ বিজয়া সম্মিলনী হচ্ছে। ৬৭ জন সদস্যের মধ্যে ৫৬ জনই অজ্ঞাত। বুথ সভাপতি, অঞ্চল সভাপতি— কেউ জানে না। এটা বিধায়কের নিজস্ব অনুষ্ঠান।”
চাঁপাতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান হুমায়ুন রেজা চৌধুরীর কথাতেও ক্ষোভ স্পষ্ট, “আমরা যারা বুথস্তরে কাজ করি, কেউ জানি না। তাহলে এই বিজয়া সম্মিলনী হচ্ছে কাদের নিয়ে?”
দলের শীর্ষ নেতৃত্ব যখন পুজো পরবর্তী সময়ে ঐক্য বার্তা ছড়াতে চায়, তখন নিচুস্তরে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ফের প্রকাশ্যে চলে আসায় অস্বস্তি বাড়ছে ঘাসফুল শিবিরে।