ব্রেকফাস্টে রোজ ডিম-টোস্ট খাচ্ছেন? ছোটখাটো বদল আনুন, তেলে ভাজা এই রেসিপিই হবে স্বাস্থ্যকর |
ফার্স্ট বয়দের বারবার টেস্ট পেপার সলভের দরকার হয় না! রায়পুরে বুঝিয়ে দিলেন বিরাট
রায়পুরে বুঝিয়ে দিলেন বিরাট
বিকল্প শিরোনাম হতেই পারত ‘মার্সেডিজ দিয়ে হালচাষ চলে না!' উপমার কেন্দ্রে একজন। তিনি নায়ক৷ বিতর্কিত৷ আপাতত শিরোনামে, চর্চায়। কেন্দ্রে একটি দৃঢ় অবস্থান (যা আপাতত একটু নরম হয়েছে)—তিনি বিশ্বকাপের যোগ্যতা প্রমাণে ঘরোয়া ক্রিকেটে নামবেন না। রাঁচি ম্যাচের শেষে জানিয়েছিলেন কারণ—কেরিয়ারে এত অর্জন, এত সাফল্যের পর কেঁচেগণ্ডূষ নিরর্থক। প্রস্তুতির সংজ্ঞা গিয়েছে পালটে। এখন আর নেটে ঘাম ঝরানো অনুশীলন, ম্যাচ ডে প্রিপারেশন জরুরি নয়। সবই মানসিক। মানসিক অনুশীলন৷ কায়িক কসরত বাতুলতা। তিনি ফার্স্ট বয়। অনেক মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিকের চ্যালেঞ্জ সামলেছেন৷ পোস্ট গ্র্যাজুয়েশনের ফাইনাল দিতে যাওয়ার আগে স্রেফ ঝালাই-ই যথেষ্ট... এখন আর কেউ শীতের রোদে খোলা ছাদে টেস্ট পেপার সলভ করতে বসে?
রাঁচির ময়দানের বক্তব্য যে বায়বীয় ছিল না, তার প্রমাণ দিতেই যেন আজ, রায়পুরে, নেমেছিলেন বিরাট৷ বস্তুভিত্তি প্রতিষ্ঠা পেল। ফের সেঞ্চুরি হাঁকালেন বিরাট। কখনও খুলে খেললেন, কখনও ধরে। সবশেষে ১০২ রানে আউট হয়ে যখন সাজঘরে ফিরলেন, তখন যা বোঝানোর পুরোটাই বুঝিয়ে দিয়েছেন। বিশ্বকাপ এখনও দূরের ডেস্টিনেশন। কিন্তু তার আগে, অন্তত সামনের কয়েক মাস, ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলা নিয়ে যে কেউ কানের পাশে শিঙে ফুঁকবে না—দুরন্ত ইনিংসের পর এই তথ্যটা বিরাটকে বোধ হয় সবচেয়ে বেশি স্বস্তি দেবে!
কী অপূর্ব স্টাইলে আজ খেলাটাকে সাজালেন বিরাট! দু'উইকেট পড়ে গিয়েছে। পিচ বিষাক্ত নয়, তবে বুঝে না খেললে স্খলনের জোর সম্ভাবনা! রোহিত সাজঘরে। আউট যশস্বীও৷ সেই অবস্থায় সূত্রধরের ভূমিকায় পার্টনারশিপ গড়ে তুললেন। ধাপে ধাপে।
একটা বড় প্রশ্ন ছিল—রাঁচির সেঞ্চুরি কি ‘এক ম্যাচের ঝলক’? নাকি তাঁর ব্যাটিং-ডিএনএতে সত্যিই কোনও বদল এসেছে? আজ রায়পুরে দেখা গেল—এটা ধারাবাহিকতা। একটা ভাবনা। একটা পরিকল্পনা। আর তার উপর দাঁড়িয়ে নিজের ‘মানসিক প্রস্তুতি থিসিস’-কেই মাঠে প্রমাণ করে দেওয়া।
বিরাট বলেছিলেন, ‘অতিরিক্ত প্রস্তুতিতে আমি বিশ্বাসী নই’। শুনে অনেকেই হেসেছিল। কেউ ভেবেছিল—অজুহাত, কারও বিদ্রূপ—‘এবার থেকে বিদেশে নেট করেও ভারতীয় দলে খেলা মঞ্জুর হবে?’ রায়পুরে ৯৩ বলে দ্বিতীয় শতরান স্পষ্ট প্রমাণ—কোনও সাধারণ ক্রিকেটার নন… বিরাট নামটাই ব্যতিক্রমী!
হঠাৎ এমন স্বাধীনতা কোথা থেকে খুঁজে পেলেন কোহলি? উত্তরটা ব্যাটিং স্টাইলের গভীরে। আগের ম্যাচ-ই যার জোরালো প্রমাণ—প্রথম ২০ বলে দু’খানা ছয়, আজও সেই মনোভাব। ইনিংসের মাঝপথে তিনি আবারও দেখালেন—রান তোলার গতি আর বাউন্ডারি হাঁকানো—দুটোই পরিস্থিতি বুঝে মিশিয়ে নিতে পারেন। যেন নতুন করে কোনও ফর্মুলা রচনা করছেন নিজের বয়স, শরীর, ভবিষ্যতের আন্তর্জাতিক ক্যালেন্ডারকে মাথায় রেখে। ঠিক পাকা রাঁধুনির মতো। কখনও আঁচ বাড়ানো, কখনও কমানো। আজ মার্কো জানসেনের অফ-লেংথ বলকে ‘গ্লাইড’ করে, পরের বলেই ‘চিপ’। একই ধাঁচের ডেলিভারিকে ফের একবার মিড-উইকেটের উপর দিয়ে তুলে দিলেন—এ এক নতুনতর কোহলি, যিনি আপাতত নকশা-বদলানো ব্যাটিংয়ে মজে!